নরসিংদীতে দূষণ ও দখলের কবলে পড়ে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলা হাড়িদোয়া নদীকে বাঁচাতে নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার বেলা ১১টায় নরসিংদী প্রেসক্লাবে সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপে পরিবেশবিদরা জানান, নরসিংদীর হাড়িদোয়া নদীসহ দেশের মৃতপ্রায় অন্য নদী ও খালগুলো নানাভাবে দূষণ করা। দখল, দূষণের কারণে নদী পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে।
বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠানের দূষিত বর্জ্য, নদী ভরাটসহ যেসব কারণে নদী দূষিত ও ভরাট হচ্ছে সেই ব্যাখ্যাও সংলাপে তুলে ধরেন বক্তারা।
নদীর গুরুত্ব, নদী পাড়ের মানুষের অর্থনীতি, ব্যবসা এবং মৃতপ্রায় নদীকে কীভাবে বাঁচানো যায় সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
শত বছরের পুরনো বাণিজ্যকেন্দ্র নরসিংদীর ব্যবসা সম্প্রসারণের পেছনে নদীগুলো শতভাগ ভূমিকা রেখেছে বলে সংলাপে উল্লেখ করা হয়।
বক্তারা বলেন, বর্তমান দূষণের ফলে নদীতে থাকা মৎস্য সম্পদের ক্ষতি, নদী পাড়ের কৃষক এবং জেলেদের ব্যবসা ধ্বংস হয়েছে।
সংলাপে হাড়িদোয়া নদী নিয়ে মূল প্রবন্ধ আলোচনা করেন নরসিংদী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ও প্রাক্তন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী।
তিনি বলেন, এক যুগের ব্যবধানে হাড়িদোয়া নদীর চেহারা বদলে গেছে। শিল্পবর্জ্য ও মিনিউসিপাল আথরিটির সলিড ওয়েস্ট দিয়ে গত এক যুগ ধরে নদীটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি দুষিত নদীতে পরিণত করা হয়েছে।
রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্স সেন্টার (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, দেশের শত শত নদী আজ হুমকির মুখে। নদী রক্ষার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলার কারণে দেশের নদীগুলো রক্ষা করা যাচ্ছে না। এছাড়া ক্ষমতাসীনদের দৌরাত্ম, ভূমি দস্যুদের আগ্রাসী ভূমিকা নদীর দূষণ ও দখল বাড়াচ্ছে।
সুইডেন সেভ্রিজ নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় যৌথভাবে নাগরিক সংলাপের আয়োজন করে নরসিংদী পরিবেশ আন্দোলন, আরডিআরসি এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা)।
সংলাপে আরডিআরসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজের সভাপতিত্বে জেলার প্রায় শতাধিক বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, নদী পাড়ের জনগোষ্ঠী ও নাগরিক সনাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।